নিজস্ব প্রতিবেদক : পুরান ঢাকার সূত্রাপুরে আফসানা আক্তার শিপা (১৭) নামে এক কলেজছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার প্রেমিক সৈকত সরকার আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গতকাল রোববার (২৩ জুলাই) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তিনি আদালতে সেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক ফিরোজ আলী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে সূত্রাপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রনপ কুমার বিষয়টি জানিয়েছেন।
উপ পরিদর্শ ফিরোজ আলী জানান, নিহত শিপা শেখ বোরহানউদ্দিন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করতেন। তার প্রেমিক সৈকত উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। দুজন দুই ধর্মের, বিয়ে করতে পারবে না, পরিবারও মেনে নেবে না। এসব বিষয় নিয়ে শনিবার (২২ জুলাই) দুপুরের দিকে শিপা ও সৈকতের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সৈকত শিপার গলা টিপে অচেতন করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে আটক ও শিপাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় শিপার বাবা মো: ফজলুর রহমান বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এজাহারে শিফার বাবা বলেন, গত শনিবার বিকালে পুলিশের মাধ্যমে সংবাদ পাই আমার মেয়ে আফসানা আক্তার শিফা (১৮) সূত্রাপুর থানাধীন ২৩, ২৩/২ সিংটোলা প্রতাপ দাস লেনের ৩য় তলায় আসামী সৈকত সরকারের বাসায় মৃত অবস্থায় আছে। পরে আমি আমার বোন হালিমা, ছোট ভাইয়ের বৌ সুলতানাসহ কয়েকজন গিয়ে দেখি আসামীর শয়নকক্ষে খাটের উপর পুলিশের উপস্থিতিতে আমার মেয়ে আফসানা আক্তার শিফার মৃত দেহ পড়ে আছে।
এজাহারে আরোও বলা হয়, আসামীর সাথে আমার মেয়ে আফসানা আক্তার শিফার ২/৩ বছর যাবত প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ধর্মীয় ভিন্নতা থাকায় আমরা তার সম্পর্ক মেনে নেইনি। আসামী সৈকত আমার মেয়েকে প্ররোচিত করে বিভিন্ন সময় তার সাথে বিভিন্ন স্থানে দেখা সাক্ষাত করতো। এবিষয়ে আমি আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে সতর্ক করতাম। ঘটনার দিন আমার মেয়ে কোচিং করার জন্য লক্ষীবাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। আসামী সৈকত আমার মেয়েকে প্ররোচিত করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার বর্তমান বাসায় নিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে।