বাংলামেইল৭১ ডেস্ক : স্থানীয়দের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ডান চোখে ছররা গুলির আঘাতে আহত শিক্ষার্থী আল-আমিন ইসলাম ভারতে উন্নত চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। গত ২৫ মে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ভারতের চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। কিন্তু চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার অভাবে দেশে ফিরে আসছেন আল-আমিন ও তার পরিবার। শনিবার তারা বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী আল-আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি সাতক্ষীরা সদর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
আল-আমিন বলেন, চেন্নাইয়ের শঙ্কর নেত্রালয়ে আসার পর চোখের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। পরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানিয়েছেন সার্জারি করলে চোখে দেখতে পাব, কিন্তু একটু ঝাপসা। বর্তমানে রেটিনা থেকে রক্তপাত হচ্ছে। ডাক্তার চাচ্ছেন রেটিনাল অ্যাটাচমেন্ট করতে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের টাকাসহ বন্ধুবান্ধবদের তোলা মোট ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা নিয়ে চেন্নাই এসেছিলাম। কিন্তু ইতোমধ্যে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বাড়ি থেকে জমিজমা বিক্রি করে টাকা আনতে হবে। এজন্য চিকিৎসা ছাড়াই টাকা আনতে চলে যেতে হচ্ছে। শনিবার দেশে যাচ্ছি। এখন ট্রেনের মধ্যে।
আল-আমিন ইসলামের বাবা আব্দুস সেলিম বলেন, চোখের পরীক্ষা ও যাতায়াত খরচসহ অন্যান্য খরচ করে আমাদের কাছে অবশিষ্ট ৩০ হাজার রুপির মতো আছে। এই টাকা দিয়ে চিকিৎসা সম্ভব না। চিকিৎসার জন্য এখন প্রয়োজন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। কিন্তু এত টাকা আমার কাছে নেই। ভাবছি বসতভিটার একটি অংশ বিক্রি করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ওনাদের মাথাব্যথা আছে, কিন্তু গুরুত্বটা কম। ডাক্তার বলেছেন চিকিৎসা নিলে ডান চোখে দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলছে চিকিৎসা করানোর পর কাগজপত্র জমা দিলে টাকা দেবে। কিন্তু চিকিৎসাটা তো করা লাগবে। সন্তান তো আমার, যেভাবে হোক চিকিৎসা করাতে হবে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম সাউদ বলেন, আমরা প্রশাসনের পক্ষ তাকে (আল-আমিন ইসলাম) ৫০ হাজার টাকা সহায়তা করেছি। স্বাস্থ্যবীমার ক্ষেত্রে কোম্পানির কিছু কন্ডিশন আছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ মার্চ বিনোদপুরের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ছররা গুলি চালায়। এতে চোখে আঘাত পান আল-আমিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি বিভাগের মিসবাহুল ইসলাম ও মার্কেটিং বিভাগের আলিমুল ইসলাম। আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেওয়ার কথা জানায়। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশাসন পুরোপুরি বহন খরচ করেনি। আলিমুলের বাঁ চোখটি নষ্ট হয়ে গেছে এবং মিসবাহুল চিকিৎসার পর চোখে ঝাপসা দেখছেন।
বাংলামেইল৭১ ডেস্ক : বাবু/কেএম