বাংলামেইল প্রতিবেদক: সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের জীবনের প্রতিফলন। সংস্কৃতির মাধ্যমেই দেশ ও জাতি নিজস্ব পরিচয় ও স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বিশ্বের দরবারে উঠে আসে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। শনিবার রাজধানীর আইডিইবি ভবনে বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম আয়োজিত ফোরামের ত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে তিন দিন ব্যাপী বৃহ্ত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক উৎসবে জাতীয় লোক সংস্কৃতিতে বৃহত্তর ময়মনসিংহের অবদান শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, হাওর বাওর, নদ-নদী, বনাঞ্চল ও গারো পাহাড় সমৃদ্ধ বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চল বাংলার লোক সংস্কৃতির অফুরন্ত ভাণ্ডার। এই লোক সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বাংলার লোক সাহিত্য বিকাশে অবদান রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও বৃহ্ত্তর সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি মোস্তাফা জব্বার প্রধান বক্তা হিসেবে ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার অঞ্চল-ভিত্তিক লোক সংস্কৃতি আমাদের অতি মূল্যবান সম্পদ। বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্দেশ্য হচ্ছে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের লোক সংস্কৃতি, লোক গাঁথা কিংবা লোক সাহিত্য বিকশিত করার পাশাপাশি পুরো বাংলাদেশের লোক সংস্কৃতি, লোক গাঁথা কিংবা লোক সাহিত্যকে বিশ্বে তুলে ধরার চেষ্টা অব্যাহত রাখা। ২০১৫ সাল থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ফোরামের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে মৈমসিংহ গীতিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুনর্মুদ্রণ প্রকাশ, পূর্ব বাংলা গীতিকার পুনর্মুদ্রণ উদ্যোগসহ বাংলার লোক সংস্কৃতি বিশ্ব লোক সাহিত্যের সম্পদ হিসেবে তুলে ধরতে ফোরামের গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরেন মন্ত্রী । লোক সংস্কৃতির বিকাশে দেশের সকল সাংস্কৃতিক সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত । তিনি বলেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, বাংলার লোকায়ত সাহিত্য, পুঁথি নিয়ে দীনেশচন্দ্র সেন যে ভূমিকা রেখেছেন তা আজও বহু গবেষককে প্রেরণা যোগায়। গ্রামের পিছিয়ে থাকা নিরক্ষর মানুষদের ভেতরেও সাহিত্যের যে ধারা বয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে বাংলার মূল ধারার সাহিত্যের পরিচয় ঘটান তিনি। বৃহত্তর মযমনসিংহ বিশেষ করে গারো পাহাড়ের পাদদেশ থেকে প্রবাহিত হাওরাঞ্চলের প্রাচীন জীবন গাঁথা মৈমনসিংহ গীতিকায় উঠে এসেছে। এটার যেমন সাহিত্য মূল্য আছে তেমনি ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে রয়েছে এর নিবিঢ় সম্পর্ক। জারি-সারী,ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালী, বাউল গান, পালা গান, পুঁথিপাঠ জুড়ে আছে বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে। বাঙালির এই প্রাচীন সম্পদকে রক্ষায় এগুলো চর্চা করতে হবে । বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরাম সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে এই কাজটি করে যাচ্ছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সি: সহ-সভাপতি ড. মো: জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো: মোজাফ্ফর হোসেন, এমপি, বিচারপতি মো: জাহাঙ্গীর হোসেন এবং অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বক্তৃতা করেন। বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান শেলী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
গত ১৮ মার্চ ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর সভাপতিত্বে ঢাকায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসেবে ৩০ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
বাংলামেইল ৭১/এমকে/বিবি