সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের সালথায় গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৮জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। ভাঙচুর করা হয়েছে ৩টি বসতঘর।
শুক্রবার ( ৬ মে) দুপুরে আটঘর ইউনিয়নের খোয়ার গ্রামে সংঘর্ষেও এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রাম্যদল ভারি করা নিয়ে খোয়ার গ্রামের আমিনুল মাতুব্বরের সাথে প্রতিপক্ষের সামাদ মাতুব্বরের বিরোধ চলছে। চলমান বিরোধের মধ্যে শুক্রবার জুমার নাজাজের ঠিক আগ মুহুর্তে গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে সামাদের সমর্থক এরশাদ মাতুব্বরের সাথে আমিনুলের সমর্থক নজরুল মাতুব্বরের কথাকাটাকাটি হয়। বিষয়টি মুহুর্তের মধ্যে উভয় পক্ষের সমর্থকদের জানাজানি হলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায় নামাজ বাদ নিয়ে উভয় পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আধা ঘন্টাব্যাপী চলে এই সংঘর্ষ।
সংঘর্ষ চলাকালে উভয় পক্ষের ৩টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমিনুল মাতুব্বর বলেন, আমি বাড়িতে ছিলাম না। কোনো কারণ ছাড়াই পাশর্^বর্তী গোয়ালপাড়া ও সেনাটী গ্রাম থেকে দেশীয় অস্ত্র হাতে লোকজন এসে আমার গ্রাম ঘিরে ফেলে। পরে আমার লোকজন প্রতিরোধ করলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আমার সমর্থক খায়রু শেখ (১৮), বাচ্চু মাতুব্বর (২০) ও আরফিন মাতুব্ব (২০) গুরুতর আহত হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের আমার আরেক সমর্থক হবি মাতুব্বরের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
সামাদ মাতুব্বর বলেন, এরশাত মাতুব্বর নামে আমার এক সমর্থককে আমিনুলের সমর্থক নজরুল মাতুব্বর ও বজলু মাতুব্বর তাদের দলে মিশতে চাপ দেয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে আমার সমর্থক জালাল শেখ (১৮) ও এরশাদ মাতুব্বর (২৮) গুরুতর আহত হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের লোকজন আমার সমর্থক এরশাদ ও জিন্নাত ফকিরের দুটি বাড়ি ভাঙচুর করে।
সালথা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শেখ সাদীক বলেন- সংঘর্ষ হয়নি। একটি পক্ষ আরেকটি পক্ষের বাড়িতে এসে হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এলাকার পরিবেশ শান্ত রয়েছে। যারা হামলা চালিয়েছে অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত- গত ১১ এপ্রিল রাতে গ্রাম্য দলাদলি নিয়ে খোয়াড় আমিনুল মাতুব্বর ও সামাদ মাতুব্বরের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে আশপাশের ৫টি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার লোক অংশ নেয়। পরে পুলিশ শর্টগানের ফাঁকা গুলি, কাদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি সামাল দেন।