নিজস্ব প্রতিবেদক : লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল ৫৩ বছর পরেও প্রতিটি পর্যায়ে পৌঁছায়নি। জনগণের মৌলিক অধিকারগুলো আজও নিশ্চিত হয়নি। দেশ পাকিস্তানের শাসকদের হাত থেকে মুক্ত হলেও দেশীয় দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। সংবিধানের প্রয়োগিক অনুশীলন করে দল-মত, গোষ্ঠী ও ধর্মনির্বিশেষে সবার জন্য দুর্নীতিমুক্ত ভারসাম্যমূলক সমাজ ব্যবস্থার প্রত্যাশায় সকলকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায় সামাজিক সংগঠন 'কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ'।
শনিবার (০৮ জুন) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে
" দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত সৎ সমাজের উদ্যোগ " শীর্ষক সেমিনার এসব কথা বলেন সংগঠনের কর্মকর্তারা।
সেমিনারে বক্তারা দেশের বর্তমান বিচার ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার দিকে আলোকপাত করে বলেন, বর্তমানে দেশে ৪২ লক্ষ মামলা বিচারাধীন রয়েছে, যার জন্য রয়েছেন মাত্র ২১ শত বিচারক ও ৯১ হাজার আইনজীবী। এই অসমতা দূর করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আরও কর্মসংস্থানের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিচার বিভাগের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি শুধুমাত্র বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগই বাড়াচ্ছে না, বরং এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যকেও বিঘ্নিত করছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ বেশ কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরে। প্রথমত, বিচার বিভাগের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং বিচারক ও আইনজীবীর সংখ্যা বৃদ্ধি করা। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় আনা। তৃতীয়ত, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনি শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ'র নেতারা বলেন, দুর্নীতি আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেঁধেছে। এটি দূর করতে হলে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিচার বিভাগের সংস্কার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি এবং সুশাসনের প্রতিষ্ঠা এ ক্ষেত্রে অপরিহার্য।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক এবং আইনজীবীরা। তারা সকলে একমত হয়ে বলেন, "আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই দুর্নীতিমুক্ত একটি সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।"
সেমিনারের শেষে 'কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ' এর পক্ষ থেকে একটি প্রতিজ্ঞাপত্র গ্রহণ করা হয়, যেখানে সকলেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন হবিগঞ্জ-৪ (চুনারুঘাট-মাধবপুর) আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন)। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রজাতন্ত্রের প্রাক্তন কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল মাসুদ আহমেদ।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের যুগ্ম আহবায়ক ও বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র এ্যাডভোকেট আহমেদ আলী শেখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন কর কমিশনার অবঃ মোঃ আসাদুজ্জামান।