প্রতিবেদন : আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য। সেই স্বাধীনতাকে আওয়ামীলীগ ধুলিস্যাৎ করেছে। তারা একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চায়। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের পদলেহনে সরকার ব্যস্ত। এজন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম – আজকে সকল মুক্তিযোদ্ধার এটা প্রশ্ন।
শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) আয়োজিত
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কর্মময় জীবন এবং জেডআরএফ’ বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
হাফিজ উদ্দিন বলেন,আমরা যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু দু:খের বিষয় দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, আইনের শাসন নেই। স্বাধীনতার একবছরের মধ্যে বুঝে গেলাম আওয়ামী লীগ স্বাধীনতার চেতনাকে নষ্ট করেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে চায়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্র তারা ধূলিসাৎ করেছে। আওয়ামী লীগ কি ধরনের গণতন্ত্র চায়, তার নমুনা আমরা বিগত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি। আজকে মানুষের বাক স্বাধীনতা নেই, ভোট দেয়ার ক্ষমতা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই। আমরা প্রতিবেশি রাষ্ট্রের পদলেহনে ব্যাস্ত। এজন্য কি আমরা যুদ্ধ করেছিলাম আজ প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধার মনে একই প্রশ্ন রয়েছে।
তিনি বলেন, ৭ মার্চের আগে ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব দানকারী সিরাজুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন। কিন্তু ৭ মার্চের ভাষণের পর ওই ছাত্র সমাজ হতাশ হয়েছিলেন। সে সময় শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। স্বাধীনতার ডাক তাদের সেই স্বপ্ন ভাঙ্গতে পারেনি। ২৫ মার্চ রাতে যে বর্বরোচিত হামলায় মানুষ যখন দিকবিদিক ঘুরপাক খাচ্ছিলো। তখন কোনো রাজনৈতিক দল পাশে দাঁড়ায়নি। তখন জনদরদি জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে নিজে রাষ্ট্র নায়ক ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। সেদিন জিয়াউর রহমান পাকিস্তানিদের সাথে বিদ্রোহ ঘোষণা না করলে আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।
মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু করেছিলো শহীদ জিয়ার ছাত্রদল। কিন্তু সেটার কৃতিত্ব নিতে চায় আওয়ামী লীগ। যাইহোক সব কিছুর একটা অবসান আছে। এই গণতন্ত্রকে হত্যার বিচারের সময় হয়ে এসেছে। বিএনপি অনেক করেছে এখন সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দরকার। বিশেষ করে যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় তারা এগিয়ে আসবে বিশেষ করে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি৷
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করেছিলো শহীদ জিয়ার ছাত্রদল। কিন্তু সেটার কৃতিত্ব নিতে চায় আওয়ামী লীগ। যাইহোক সব কিছুর একটা অবসান আছে। আমরা যে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করেছি সেই গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা রক্ষায় দেশের তরুণ প্রজন্মসহ সাধারন মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, আজকে দেশে একটি কান্তিকাল অতিক্রম করছে। মানুষ এখন ভোট দিতে যায় না। আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে শেষ করে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছে। আমাদের ছেলেদের গুম করছে। দেশের প্রতিটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা আজ রাজপথে নেমে এসেছে।
জেডআরএফ’র নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডা. পারভেজ রেজা কাকনের সঞ্চালনায় আরও বক্তৃতা করেন, ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেশন সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে-একাংশ) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডক্টরস এসোসিশেয়ন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, জেডআরএফর স্বাধীনতা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ।
###