প্রতিবেদন: সাংবাদিক ও শিক্ষকরা কেউ আওয়ামী লীগ এবং কেউ বিএনপি। এসব পরিচয় সাময়িক ফল বয়ে আনলেও ভবিষ্যতে পুরো জাতীর উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে। এজন্য সাংবাদিক ও শিক্ষকদের রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। তাছাড়া নারীদের যৌন আবেদনময়ী ও বানিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গিতে উপস্থাপনসহ সংবেদনশীল বিষয়গুলো নিয়ে মিডিয়াকে আরো দায়িত্বশীল হতে হবে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি )রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বিশিষ্ট সাংবাদিক এবিএম মূসার ৯৩তম ও সেতারা মূসার ৮৪তম জন্মবার্ষিকী ও স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবিএম মূসা – সেতারা ফাউন্ডেশন।
সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার ও দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবাইয়্যাত ফেরদাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন নাসিম, প্রেস ইন্সটিউডের সাবেক পরিচালক সীমা মোসলেম, প্রথম আলোর সংবাদ-পরামর্শক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কুর্রাতুল আইন তাহ্মিনা,
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শহীদুল্লাহ রিপন, সাংবাদিক শাহানাজ মুন্নি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে
এবিএম মূসা-সেতারা মূসা আজীবন সম্মাননা তুলে দেয়া হয় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের হাতে। তাছাড়া ‘গণমাধ্যমে জেন্ডার পরিসর : নারীর নির্মিতি এবং নারীর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন।
পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়া আজাদী সম্পাদক বলেন, সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম। সত্যকে প্রতিষ্ঠায় অনেক বাধা আসে। এসব বাধা অতিক্রমে সাহস থাকতে হয়। সেই সাহস এবিএম মূসার ছিল। পাকিস্তান আমলে সাংবাদিকতায় অনেক বেড়াজাল ছিল। সে সব উতরে গেছেন এবিএম মূসা। তার নামে চালু হওয়া পুরস্কার আমাকে দেয়া হলো, তাতে আমি খুবই গৌরবান্বিত। যত পুরস্কার পেয়েছি, এটিই আমার কাছে সবচেয়ে সম্মানের।
স্মারক বক্তৃতায় ড. কাবেরী বলেন, প্রিন্ট মিডিয়া অনেক বেশি পুরুষতান্ত্রিক। নারীর ইমেজ নির্মাণে প্রিন্ট মিডিয়া অনেক সূক্ষ্ম কৌশলীও। সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্রগুলো মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকেছে। সেখানে নারীর প্রতি সহিংসতার ভিন্নমাত্রা যুক্ত হয়েছে পাঠকের মন্তব্য ঘরে। যুক্ত হয়েছে অনলাইন পোর্টাল নামের বিভীষিকাময় ক্লিক-বেইট সাংবাদিকতা, যা অনেক
ক্ষেত্রেই নারীকে ধরাশায়ী করার উপায় ও উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
আলাউদ্দিন নাসিম বলেন,
সংবাদ পণ্যে পরিণত হয়েছে। মার্কেট ইকোনমির খারাপ দিকের কারণে সংবাদ পণ্যে পরিণত হয়েছে। তাই বিষয়টি নিয়ে আরো সচেতন হতে হবে। বর্তমানে সাংবাদিক ও শিক্ষক দুই ভাগে বিভক্ত। কেউ আওয়ামী লীগের শিক্ষক ও সাংবাদিক, কেউ বিএনপির। এটা হয়তো সাময়িক ফল বয়ে আনতে পারে, কিন্তু ভবিষ্যতে এটা পুরো জাতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠবে। তাই শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতাকে রাজনৈতিক আদর্শের উর্ধে উঠতে হবে।
ঢাবি শিক্ষক কুর্রাতুল আইন তাহ্মিনা বলেন,
ডক্টর গোলাম রহমান বলেন, এবিএম মূসা গণতান্ত্রিক মন মানসিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন তাই নয়,উনার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার যোগ্যতা ছিল । এছাড়া অনেক বিষয়ে তিনি পারদর্শী ছিলেন। প্রগতিশীল রাজনৈতিক ধারকবাহকরা তাঁকে অনুসরণ করতো।