প্রতিবেদন: বিজ্ঞানের অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় আকাশে চাঁদ উদিত হলে সারা বিশ্বে গ্ৰহনযোগ্য পদ্ধতিতে খবর পৌঁছে যাচ্ছে। ফলে একই সময়ে রোজা ও ঈদ পালনে ইসলামী শরিয়তে কোন বাধা নেই। তাই ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সর্বোচ্চ ফিক্হ একাডেমীর গৃহিত সিদ্ধান্তে বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরী তারিখ বাংলাদেশেও বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি দাবী জানিয়েছেন মুসলিম উম্মাহ ট্রাস্ট্র।
সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘কুরআন-সুন্নাহ্ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ‘উলামা- মাসাইখসহ ওআইসি’র সর্বোচ্চ ফিক্হ একাডেমী কর্তৃক গৃহিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্বব্যাপী অভিন্ন হিজরী তারিখ অন্যান্য মুসলিম দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বাস্তবায়নের দাবীতে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
হিজরী ক্যালেন্ডার বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি ও
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম শসশের আলীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন কর্ণেল (অব.) জি.র.মো. আশরাফ উদ্দিন। সেমিনারে বক্তৃতা করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের (অব) বিভাগীয় প্রধান
অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান, সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক আ.ন.ম. রশীদ আহমাদ মাদানী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. আযহার উদ-দীন, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজীর অধ্যাপক ড. শামসুদ্দীন আহ্লাদ, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা সোসাইটির সভাপতি লেখক ও গবেষক মাওলানা আবদুস শহীদ নাসিম ,
ফরিদগঞ্জ কামিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মুফতি ড.এ কে এম মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রোজা ও ঈদ পালনে “চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল” কথাটা অনাবশ্যক ও ত্রুটির সৃষ্টিকারী। পৃথিবীর দেশে দেশে চাঁদ দেখার কোন প্রয়োজন নেই। সমগ্র বিশ্বের কোথাও না কোথাও চাঁদ দেখা গেলেই চন্দ্র মাস শুরু হয়েছে বুঝতে হবে। যেভাবে আমরা কোরআনের নির্দেশ পালনের সহায়ক হিসেবে ঘড়িকে গ্রহণ করেছি, একই ভাবে চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম নির্দেশের সহায়ক হিসেবে “আন্তর্জাতিক হিজরী ক্যালেন্ডার “কে অনুসরণ করতে পারি। উত্তম পন্থা হাতের কাছে রেখেও যদি আমরা চাঁদ দেখার ত্রুটিপূর্ণ বা সীমাবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করি, তাহলে তা আমাদের জেদ, অনৈক্য ও অজ্ঞতাকেই নির্দেশ করবে।
তারা আরো বলেন, আমাদের দেশের পূর্ব পশ্চিমের দেশগুলোতে চাঁদ দেখা গেলে ওরা ঈদ পালন করলো, আর আমরা চাঁদ দেখিনি বলে একসাথে ঈদ পালন করতে পারলাম না । এটা অত্যন্ত লজ্জার এবং অজ্ঞতা । এমন কাজ শুধু উম্মাহর ঐক্য কে প্রশ্নবিদ্ধ করে না বরং মুসলমানদের জ্ঞান বিজ্ঞানের উন্নতির দাবিকে উপহাস করে। আকাশে একটি চাঁদ, তাই শুধু পার্শ্ববর্তী দেশ নয় যে কোন দেশেই নতুন চাঁদ উঠার অর্থ চন্দ্রমাস শুরু হয়ে গেছে। এ কারণে কোরআন-সুন্নাহ এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের আলোকে অসংখ্য ওলামা মাশায়েখ এবং ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক একাডেমী সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, পৃথিবীর সর্ব পশ্চিম প্রান্তে নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ পাওয়া গেলে উক্ত সংবাদ পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তে বসবাসকারী মানুষের নিকট গ্রহণযোগ্য পদ্ধতিতে পৌঁছালে কিংবা জ্যোতির্বিজ্ঞানের বদৌলতে পৃথিবীর আকাশে নতুন চাঁদ দৃশ্যমান হলে একই তারিখে সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে সিয়াম ও ঈদসহ চন্দ্র মাস কেন্দ্রিক সকল ইবাদত পালন করতে হবে। বাংলাদেশে এক ও অভিন্ন পদ্ধতিতে চন্দ্রমাস উদযাপনের দাবি জানান তারা।