নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা : আসন্ন দুর্গা পূজায় ৩ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষনা, দুর্গা পূজায় প্রতিটি স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে সরকারী খরচে সিসি টিভি ব্যবস্থা করাসহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং দ্রুত সংখ্যালঘু কমিশন বাস্তবায়ন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সবার জন্য সমান প্রয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় হিন্দু মহাজোট।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় হিন্দু মহাজোট আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান জোটের নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে জোটের নির্বাহী মহাসচিব ও মুখপাত্র পলাশ কান্তি দে বলেন, প্রতিনিয়ত এদেশে ধারাবাহিক ভাবে সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে। এতে করে আজ হিন্দু সম্প্রদায় ভীত হয়ে পড়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের মনোবল ভেঙ্গে গেছে। তারা চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে। দেশে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে যে, হিন্দু সম্প্রদায় এখন তাদের বাড়ি, নারী, মন্দির ও জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছে। এই কারনে অনেকে দেশ ত্যাগে বাধ্য হচ্ছে। জেলাগুলোতে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে এবং তাদের মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুর করা হচ্ছে ।
তিনি আরও বলেন,হিন্দু সম্প্রদায় ৫ দিন ধর্মীয় কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত থেকে ধর্মীয় রীতি নীতি মেনে দুর্গা পূজা সম্পাদন করতে হয়। দুর্গা পূজার মূল ৩টি দিন সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতে দিন রাতভর পুজার কাজে ব্যস্ত থেকে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে দুর্গা পূজা সম্পাদন করতে হয়। দুর্গা পূজায় হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন ভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। কারণ ৫ দিনের দুর্গা পূজায় মাত্র ১ দিন সরকারি ছুটি। যার কারনে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই দুর্গা পূজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থেকে পুঁজার আনন্দ ও ধর্মীয় যজ্ঞ শেষ করতে পারে না। এমনকি পরিবার পরিজন এর সাথে পুজার আনন্দ ভাগ করে নিতে পারে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করি, যেন দুর্গা পূজায় ৩দিন সরকারী ছুটি করা হয়। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে দুর্গা প্রতিমা বানানোর সময় হয়েছে। ব্রাহ্মনবাড়িয়ার সরাইল, ফরিদপুর, হবিগঞ্জের মাধবপুর, নারায়নগঞ্জের সোনারগাও তে প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরে হামলার আশংকা করছি। পুজা যত ঘনিয়ে আসবে মন্দির ও প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা তত বাড়বে। আমরা ২০২০ সালের শারদীয়া দুর্গা পূজা নিয়ে শংকা বোধ করছিলাম। তখন বিভিন্ন স্থানে পূজা মন্ডপে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছিল।
এবছরও সারা দেশব্যাপী পুজার আগে ও পরে, এমন কি পুজা চলা কালিন সময়ে দূর্গা মন্দিরে হামলার আশংকা করছি। যে কোন জায়গায় হামলা হতে পারে। সেই সমস্ত জায়গাসহ সারা দেশে দুর্গা পুজার আগে ও পরে নিরাপত্তা জোরদার করার আহবান জানিয়ে দুর্গা পূজায় সরকারি ছুটি তিনদিন করা, প্রত্যেকটি স্থায়ী ও অস্থায়ী পূজা মন্দিরে সরকারী খরচে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা সহ প্রতিটি মন্দিরে পূজার ১০ দিন আগে থেকে পূজাচলা কালীন সময় পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার,সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশন গঠন এবং দ্রুত বাস্তবায়ন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সবার জন্য সমান প্রয়োগ করার দাবি জানান তারা।
এসব বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পুরনসহ অন্যান্য বিষয়ে সুস্পষ্ঠ বক্তব্য না আসলে আগামী ১৩ই অক্টোবর – ২০২৩ দাবি আদায়ের স্বপক্ষে ঢাকা সহ দেশব্যাপী হিন্দু মহাজোট মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করবে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জোটের প্রধান সমন্বয়কারী ড. সোনালী দাস, জোটের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিত কুমার মৃধা, প্রভাস চন্দ্র মন্ডল, তপন হাওলাদার, জগন্নাথ হালদার, সুনীল মালাকার, সঞ্জয় কুমার রায়, জোটের যুগ্ম মহাসচিব শিপন কুমার বিশ্বাস, অখিল মণ্ডল, ব্যারিস্টার পল্লব আচার্য, শ্যামল রঞ্জন মন্ডল, সমীর সরকার, ফণিভূষণ হালদার, সুশীল কুমার মিত্র, ডাঃ নিমাই চন্দ্র আচার্য, জগবন্ধু হালদার, হারাধন বিশ্বাস, কেনেডি ঘোষ, সুকুমার রায়, ডা: রামকৃষ্ণ দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক আশীয় বাড়ৈ, সঞ্জয় কুমার সাহা, বিপুল দে, খগেন সুত্রধর, সন্তোষ মাহাতো, শংকর পান্ডে, কার্তিক কর্মকার, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মৃদুলা বিশ্বাস, নন্দীতা ঘরামী, হিন্দু যুব মহাজোট এর প্রধান সমন্বয়কারী পংকজ হালদার, সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে, সাধারন সম্পাদক রাজেস নাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাধব নাম হিন্দু ছাত্র মাহাজোটের সভাপতি অনুপম দাস, নির্বাহী সভাপতি অভিজিৎ রায়, সাধারন সম্পাদক রাজিব সাহা প্রমূখ।