নিজস্ব প্রতিবেদক : বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাবে দেশের একজন নাগরিকের গড় আয়ু ৬ বছর ৮ মাস বা পৌণে সাত বছর কমছে। বিশ্বের সকল মানুষের গড় আয়ু ২ বছর ৪ মাস কমছে। এছাড়া আয়ুষ্কালের পরিপ্রেক্ষিতে বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা, দুষণ বাংলাদেশে মানব স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম হুমকির বিষয় উঠে এসেছে এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স- ২০২৩ নামে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে।
এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স-২০২৩ নামে ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ‘বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাপার সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সহ-সভাপতি অধ্যাপক এম শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর, পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব প্রমুখ।
বাপার যুগ্ম সম্পাদক বলেন, ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজিজেস অফ দা চেস্ট অ্যান্ড হসপিটালে ২০২১ সালে আউটডোর এবং জরুরী বিভাগ মিলিয়ে ২ লাখ ১০ হাজার রোগী চিকিৎসাধীন ছিলো। ৭ বছর আগে এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৮৫ হাজার। অন্যদিকে রাজধানীর জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটের হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসে হাসপাতালে ভর্তি, আউটডোর ও জরুরি বিভাগ মিলে রোগীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজারের কিছু বেশি। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ওই সংখ্যা ১৪ হাজার পার হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, সীসা দূষণের ফলে বাংলাদেশে প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে ১ লাখ ৩৮ হাজারেরও বেশি মানুষ এবং এই কারণে শিশুদের আইকিউ কমে যাচ্ছে। ফলে তাদের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
বায়ু দূষণের কারণ উল্লেখ করে তিনি জানান, বায়ু দূষণের কারণগুলোর মধ্যে প্রাকৃতিক ও আবহাওয়া জনিত কারণ, নগর পরিকল্পনায় ঘাটতি, আইনের দুর্বলতা, আইন প্রয়োগের সীমাবদ্ধতা, ভৌগোলিক কারণ এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যতম।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বায়ুদূষণের কারণে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ নাগরিক শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। এটা সারা দেশে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করছে। সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে, বিকলাঙ্গ প্রজন্ম, প্রতিবন্ধী শিশু তৈরি করবেন নাকি শিল্পপতিদের কাছে মাথানত করবেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে এই ব্যাপারে সরকারকে অঙ্গীকার করতে হবে।