প্রেস একাত্তর প্রতিবেদন : ঝালকাঠি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সির ও যুবলীগ নেতা কামাল শরীফের বিরুদ্ধে ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে নেয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শেখ মোহাম্মদ সাঈদ ও তার পরিবার।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোঃ আকরাম খাঁ হল রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে ব্যবসায়ী মোঃ সাঈদ বলেন,ঝালকাঠি পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডে তুলাপট্টি (কাড়িয়াপট্টি) মদিনা মসজিদ গলির ৩১ হোল্ডিংয়ের জমিটি ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে দীর্ঘ ৭১ বছর ধরে আমার দাদা ও বাবার ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি তাদের মৃত্যুর পর আমরা সন্তানদের ভোগ দখলের থাকলেও আজ স্থানীয় কাউন্সির ভূমিদস্যু, কথিত যুবলীগ নেতা কামাল শরীফ ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী অবৈধ ভাবে মালামালসহ জবর দখল করে আমাদের সেখান থেকে বিতাড়িত করে দিয়েছে। বহু সন্ত্রাসী ঘটনার নায়ক এই নব্য ভূমিদস্যু কাউন্সিলর শহরের প্রানকেন্দ্রে আমাদের কোটি টাকার সম্পদসহ মালামাল-টাকাপয়সা লুট করে নিলেও আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। এখন আমরা প্রাণ নাশের হুমকিতে পরিবার পরিজন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তিনি আরোও জানান, ১৯৪০ সালে আমাদের দাদা মৃত শেখ রাজ্জাক পূর্বের মালিক দেবেন্দ্র নাথ সাহার কাছ থেকে ওই জমি আমার পিতা শেখ কালুর নামে ৩৬ শতাংশ জমি সাফ কবলা দলিল মূলে ক্রয় করে লেপ তোসক নির্মান ও বিক্রির ব্যবসা শুরু করে। তার মৃত্যুর পর আমাদের পিতা শেখ কালু ওয়ারিশ সূত্রে উক্ত সম্পত্তির মালিক হয়ে ক্রয়কৃত সম্পত্তিতে নতুন করে ঘর নির্মান করে একই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। এরমধ্যে প্রতিবেশী সৈজদ্দিন খান গং রেকর্ড ত্রুটির সুযোগে উক্ত সম্পত্তি দাবী করলে আমার পিতা শেখ কালু ১৯৬২ সালে বরিশাল ১ম সাবজজ আদালতে মামলা দায়ের করলে রায়ে সোলে সূত্রে ডিগ্রি প্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে আমরা উক্ত সম্পত্তি ভোগদখলে থেকে ব্যবসা বানিজ্য চালিয়ে আসলে ২০১৩ সালে মৃত সৈজদ্দিন খানের পুত্র সাবেক বিচারপতি সুলতান হোসেন খান গং এসএ রেকর্ডের ত্রুটি ধরে উক্ত সম্প্রতি ঝালকাঠি সদর সাব রেজিষ্টারের যোগসাজসে বিক্রির ষড়যন্ত্র শুরু করে। আমরা মৃত শেখ কালুর ওয়ারিশরা বিষয়টি টের পেয়ে রেকর্ড সংশোধনী ও চীরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার চেয়ে ঝালকাঠি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করি। আদালত আমাদেও নালিশী মামলা আমলে নিয়ে উকিল কমিশন গঠনের নির্দেশ দিলে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক কমিশনের রিপোর্ট আমাদের পক্ষে হলে আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। এ অবস্থায় পরসম্পত্তি লোভী ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা কামাল শরীফ বিবাদী পক্ষের সাথে আমাদের মামলা চলমান অবস্থায় একটি বেআইনী সোলে ডিগ্রী প্রস্তুত করে গত গত ২১ আগষ্ট ২০২৩ তারিখ তার নিজ মোবাইল ফোন দিয়ে আমাদের পরিবারের সদস্য শেখ মাসুদকে তার বাসায় হাজির হতে নির্দেশ দেয়। শেখ মাসুদ সেদিনই রাত ১০টায় কাউন্সিলর কামাল শরীফের বাসায় হাজির হলে সে ৭দিনের মধ্যে সম্পত্তি ও দোকান থেকে চলে যেতে এবং আদালতে চলমান ২টি মামলাই তুলে নিতে হুমকি দেয়। অন্যথায় পুরো পরিবারকে ঝালকাঠি থেকে চীরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেবে বলে ঘোষনা করে। বিষয়টি আমরা স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আমির হোসেন আমাকে অবগত করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে গত ১ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় দেশীয় ও আগ্নেঅস্ত্রে স্বজ্জিত শতাধিক সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের ৩৬শতাংশ জমি ও সেখানে আমাদের পরিচালিত মেসার্স মাসুদ বেড সাপ্লাই নামের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান, তার গোডাউন ও পার্শবর্তী বাঙ্গাড়ী মালামালসহ দুটি প্রতিষ্ঠানের সমস্ত মালামালসহ দখল করে নেয়। আমাদের ঠেকাতে দোকানে যাওয়ার সকল রাস্তার মোড়ে ও বাড়ীর আশেপাশে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বাহিনী মোতায়েন করায় আমরা কেউ ঘর থেকে বের হতে পারিনি।পরের দিন আমরা প্রান বাঁচাতে ঝালকাঠি ছেড়ে আশেপাশের এলাকায় আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে আশ্রয় নেই।
ভূমিখেকো কাউন্সিলর কামাল শরীফ একজন হোয়াইট কালার ক্রীমিনাল হিসাবে ইতিমধ্যে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করে জেলা জুড়ে আতংকের নামে পরিনত হয়েছে। ইতিমধ্যে সে আধিপত্য বিস্তার ও ভূমি দখলে বাধা দেয়ায় ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিল মো: হুমায়ূন কবির খানকে কুপিয়ে একটি হাত কেটে ফেলা, কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সন্দেহে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক আজাদ রহমানকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টাসহ অসংখ্য দখল, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটালেও অর্থ ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে আইন-আদালতের উর্ধে থাকতে সক্ষম হয়েছে। এধরনে একজন সন্ত্রাসী আমাদের সম্পত্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠাত দখল করায় আমরা প্রতি মূহূর্তে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদের একমাত্র অবলম্বন সম্পত্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উদ্ধারের লক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কামাল শরীর সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে নেমেছে। ওই জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার নিজের। ওই সম্পত্তির কাগজপত্র রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।