নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রয়লার মুরগি, গরু ও খাসির মাংসসহ সব ধরনের পণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আমদানির অনুমতি চেয়েছে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি। একইসঙ্গে যেসব অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর ইস্কাটনে পুলিশ কনভেনশন হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান। এ সময় সংগঠনের সভাপতি মো. ওসমান গনিসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। একই দিনে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির ৩৫তম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের (বর্ধিত) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আগামী দুই বছরের জন্য সমিতির সভাপতি ওসমান গনি এবং মহাসচিব ইমরান হাসান পুনরায় নির্বাচিত হন।
ইমরান হাসান বলেন, ‘সারা বিশ্বে একটি ক্রান্তিকাল যাচ্ছে বাজার পরিস্থিতিতে। আমরাও এ ক্রান্তিকালের বাইরে না। বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারছে না। আমরা এখনও সরকারের কোনও উদ্যোগ দেখতে পাইনি। বাজারে প্রতিদিন মাছ ও মাংসের দাম বেড়েই চলেছে। এরইমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, সরকার গরুর মাংস রফতানি করবে। কিন্তু আমরা জানাতে চাই, গরুর মাংস আমাদের দেশেই পর্যাপ্ত নেই। আমরা কী করে রফতানি করবো? বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে গরুর মাংসের দাম সবচেয়ে বেশি। তাই গরু-ছাগল ও পোলট্রি ফার্মের মুরগির মাংসের দাম কমাতে অবিলম্বে আমদানি করার অনুমোদন দেওয়া হোক। সরকার এসব পণ্য আমদানি করার অনুমতি দিলেই বাজার স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে মাছ, মাংস, ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতি হচ্ছে। চড়া দ্রব্যমূল্য উসকে দিচ্ছে মূল্যস্ফীতিকে। মূল্যস্ফীতির কষাঘাতে পিষ্ট হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গত কয়েক মাস ধরে ৮ শতাংশের বেশিহারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। গত জুন মাসেও মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এতে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমছে, যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে রেস্তোরাঁ খাতে। বেশিরভাগ রেস্তোরাঁর দৈনিক বিক্রি অনেকাংশে কমে গেছে। এ অবস্থায় কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ জরুরি। তাই গরু, ছাগল ও পোলট্রি ফার্মের মুরগির মাংস আমদানি করার অনুমতি দিতে হবে।’ হোটেল রেস্তোরাঁয় ৩০ শতাংশ বিক্রি কমেছে বলে দাবি করেন সংগঠনটির মহাসচিব।
তিনি বলেন, ‘একইসঙ্গে টিসিবির মাধ্যমে রেস্তোরাঁ খাতে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপণ্য বিতরণের দাবি করছি। এই অর্থনৈতিক সংকটকালে রেস্তোরাঁ খাত টিকিয়ে রাখতে, ট্যাক্স ছাড়ের পাশাপাশি ট্যাক্সের হার কমানোর প্রস্তাব করছি। একইসঙ্গে ট্যাক্স আদায়ের নামে মাঠ পর্যায়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তার হয়রানি থেকেও নিস্তার চাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভ্যাট-আদায় বৃদ্ধি এবং সমপ্রতিযোগিতা নিশ্চিতের জন্য এনবিআরের কাছে ভ্যাট আদায়ে সব রেস্তোরাঁয় ইএফডি মেশিন সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি স্ট্রিট ফুডসহ সব রেস্তোরাঁকে ভ্যাটের আওতায় আনতে হবে।’ করপোরেট খামারিদের সিন্ডিকেটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা তো আছেই। তার সঙ্গে রাস্তায় চাঁদাবাজির কথা আমরা শুনেছি।’