নিজস্ব প্রতিবেদক : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট মানবসম্পদ বাংলাদেশের বড় শক্তি। দেশের শতকরা ৭০ভাগ কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠীকে ডিজিটাল দক্ষতা প্রদান করার মধ্য দিয়ে তাদেরকে স্মার্ট মানব সম্পদে পরিণত করা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জোরালো ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন স্মাট মানব সম্পদই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। বুধবার ( ২৬ জুলাই ) রাজধানীর ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল প্লাজায় ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য আয়োজিত “প্রথম গ্র্যাজুয়েশন’’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
গ্র্যাজুয়েশন সিরিমনি বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, এমপি। ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ কে এম হাসান রিপন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইউএনডিপির অতিরিক্ত আবাসিক প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ চাকমা, আইডিইবি এর সভাপতি এ কে এম এ হামিদ, ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আর মাহামুদ জামান প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী শিক্ষার্থীদেরকে সোনার চেয়ে দামি সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ তোমাদের হাতেই গড়ে উঠবে। স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য চারটি অনুষঙ্গের মধ্যে স্মার্ট নাগরিক ও স্মার্ট সমাজ খুবই গুরুত্বপুর্ণ বিষয় বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত। তিনি বলেন, স্মার্টনেস মানে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন। প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল তাছাড়া যে প্রযুক্তি নিয়ে পড়া লেখা করছো কর্মক্ষেত্রে তা হয়তো থাকবে না। ডিজিটাল শিক্ষা দক্ষতা অর্জনে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। স্মার্ট মানব সম্পদ তৈরির জন্য উপযুক্ত পরিবেশসহ যা যা দরকার সেটির জন্য সম্ভাব্য সব কিছুই করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের পথ প্রদর্শক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাড়িয়েও দেশে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের বীজ বপন করেছিলেন। তিনি ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন করেন। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন, দেশে কারিগরি শিক্ষা প্রসারে উদ্যোগ গ্রহণ, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণসহ বিস্তারিত কর্মসূচি বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের অভিযাত্রা শুরু করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে দেশে কম্পিউটার, ইন্টারনেট ও মোবাইল প্রযুক্তি বিকাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুগান্তকারি কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজকে চারা গাছে রূপান্তরিত করেন। ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ অভাবনীয় রূপান্তর ঘটে যা আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। গত সাড়ে ১৪ বছরে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক নির্মিত হয়েছে। দেশের ৯৮ অঞ্চলে ফোরজি ইন্টারনেট পৌছে দেয়া হয়েছে। ফাইভ-জি প্রযুক্তির যুগে আমরা প্রবেশ করেছি। ২০০৬ সালে দেশে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারটের দাম ছিল ৭৫ হাজার টাকা। আমরা একদেশ এক রেটের মাধ্যমে তা ৬০ টাকায় নির্ধারণ করেছি বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে দেশে সাড়ে সাত লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করতো বর্তমানে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
গ্র্যাজুয়েশন সেমিনারে বক্তা হিসেবে মাশরাফি বিন মূর্তজা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী জীবন চলে না। আপনি প্রত্যেকে উচ্চ এবং নিম্ন, কঠিন এবং সহজ, এবং, দুঃখজনকভাবে, মাঝে মাঝে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে পারেন এবং জীবন যথেষ্ট মসৃণ নৌযান নাও হতে পারে। আপনি কীভাবে নিজেকে পরিচালনা করবেন সে বিষয়টিই আপনার সাফল্যের প্রকৃত স্তর নির্ধারণ করবে। স্বাগত বক্তব্যে ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ কে এম হাসান রিপন বলেন, ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষা উদ্ভাবনকে অনুঘটক মনে করেছে এবং এর একাডেমিক সিস্টেমের সম্পূর্ণ ডিজিটাল রূপান্তর নিশ্চিত করেছে।