নিজস্ব প্রতিবেদক : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহর চৌধুরীর বাসায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় তার ছেলে বারীষ হাসান চৌধুরীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (২৬ জুলাই) করপোরেশনের অঞ্চল-১ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক ধানমন্ডি ৯/এ এলাকার ৫১ নম্বর হোল্ডিংস্থিত প্রয়াত ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ‘বৈভ্রাজ’ নামক বাসভবনের চারপাশে ও বাসার চাদে মশার লার্ভা পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এ জরিমানা করে।
এছাড়াও আজ করপোরেশনের আওতাধীন খিলগাঁও, মায়াকানন, ঝাউচর, হাজারীবাগ, ঝিগাতলা, টিকাটুলি, পশ্চিম নন্দীপাড়া, উত্তর মান্ডা, কাজীরগাঁও, কুতুবখালী, মেরাজনগর ও জিয়া সরণি এলাকায় আরও ৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। আজ দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর-আল-নাসীফ ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মায়াকানন এলাকায় ৪১টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি। এছাড়াও দুই নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আর এম শাহনেওয়াজ ১ নম্বর ওয়ার্ডের খিলগাঁও এলাকায় ৫০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন। আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।
তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তায়েব-উর-রহমান ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাউচরের শাজাহান মার্কেট এর স্বপ্ন ডাঙ্গা আবাসিক এলাকায় ১০৮টি স্থাপনা পরিদর্শন করেন৷ আদালত এ সময় ব্যক্তি মালিকানার ৩টি নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার জরিমানা আদায় করেন। তাছাড়াও তিন নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিগাতলা এলাকায় ৩১টি স্থাপনা পরিদর্শন করেন৷ আদালত এ সময় কোনো স্থাপনায় মশার লার্ভা পাননি।
পাঁচ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নজরুল ইসলাম ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের টিকাটুলি ও হাটখোলা এলাকায় ৪৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
ছয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহরিয়ার হক ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম নন্দীপাড়া এলাকায় ৬০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ২টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ২ মামলায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
অঞ্চল-৭ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাওসীফ রহমান ৭২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মান্ডা এলাকায় ৩০টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
নয় নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিনুল ইসলাম ৬৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীরগাঁও এলাকায় ৩৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ১টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ১ মামলায় ২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
দশ নম্বর অঞ্চলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা ৫৯, ৬০ ও ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কুতুবখালী, মেরাজনগর ও জিয়া সরণি এলাকায় ৮৫টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করেন এবং ৩টি স্থাপনায় মশার লার্ভা পাওয়ায় ৩ মামলায় ৮২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
সবমিলিয়ে আজ ১০টি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে সর্বমোট ৫৩৮টি বাসাবাড়ি ও স্থাপনা পরিদর্শন করা হয়েছে। এ সময় ১৩টি বাসাবাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে মশার লার্ভা পাওয়ায় ১৩ মামলায় সর্বমোট ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
আজিমপুরসহ ৩ কবরস্থানে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম : এদিকে বুধবার আজিমপুর কবরস্থানসহ করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন ৩ কবরস্থানে বিশেষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। আজ প্রথমবারের মতো আজিমপুর কবরস্থানের ভিতরের সকল প্রকার আগাছাসহ ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার ও মশক নিধনে বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হয়। অঞ্চল-৩ এর ১২টি ওয়ার্ডের ৯৫০ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও শতাধিক মশককর্মী বিশেষ এই কার্যক্রমে অংশ নেন। এছাড়াও আজ খিলগাঁও কবরস্থানে এবং গতকাল জুরাইন কবরস্থানে বিশেষ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। সেসব কবরস্থানে শতাধিক পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও মশককর্মী অংশ নেন।
বিশেষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন কার্যক্রমে অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, অঞ্চল-২ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা সোয়ে মেন জো, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসিবুর রহমান মানিক, ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মাহবুবুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।