নিজস্ব প্রতিবেদক : সামাজিক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সেচ্ছাসেবী সংগঠন "ভালো কাজের হোটেল" কে পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের দোতলা বাড়ি বরাদ্দ দিলেন ঢাকা জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার ঢাকা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে ভালো কাজের হোটেলের উদ্যোক্তা আরিফুর রহমানের হাতে ওই জমির বরাদ্ধপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক মোঃ মমিনুর রহমান। বরাদ্ধপত্র তুলে দেওয়ার পরে আরিফুর রহমানকে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার জন্য আহবান করা হলে তিনি বক্তব্যের এক পর্যায়ে আবেগে কেঁদে ফেলেন।
ভালো কাজের হোটেল প্রতিষ্ঠাতা আরিফুর রহমান বলেন, আজকের বিষয়টা স্বপ্নের মত লাগছে। কারণ আমি ছোটবেলায় হুমায়ূন আহমেদ স্যারের একটি নাটক দেখে ভালো কাজের হোটেল খুলতে অনুপ্রাণিত হই। তখন আমি প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। পরে ভার্সিটিতে উঠার পর বন্ধু ও ছোট ভাইদের সঙ্গে এ বিষয়টি নিয়ে শেয়ার করি। তখন আমার কাছে মনে হয় এটা ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন। তখন আমাদের রান্নার জায়গা ছিল না। কমলাপুর স্টেশনে রান্না করতে গেলে সেখান থেকে আমাদেরকে তাড়িয়ে দেয়া হয় এবং আমরা হোটেল চালাতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন ছিলাম । আজকে জেলা প্রশাসন মহোদয় আমাদেরকে যে সহযোগিতা করলেন, এজন্য আমরা চির কৃতজ্ঞ। আমাদের হয়তো আর কেউ তাড়িয়ে দিতে পারবে না। আমরা অসহায় মানুষের জন্য একটি স্থায়ী কিচেনের ব্যবস্থা করতে পারব; এ বলেই তিনি কান্না ভেঙে পড়েন। ওই সময় জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাকে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যাক্ত করেন।
জমি বরাদ্দ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মোঃ মমিনুর রহমান বলেন, আমরা সবাই আসলে ঘরের খেয়ে ঘরের মোষ তাড়াই। তবে সমাজে কিছু মানুষজন থাকে যারা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়। যারা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ায়; তারাই কিন্তু আজকে এই বাংলাদেশ ও আমাদের সমাজ সভ্যতা এগিয়ে নিয়ে গেছে। যারা শুধু নিজেদের চিন্তা করে, তারা কিছুই করতে পারে না। যারা সমাজের মঙ্গলের জন্য চিন্তা করে, মানব সমাজের মঙ্গলের জন্য চিন্তা করে , তাদের জন্যই মানবিক মানুষ গড়ে উঠে। ভালো কাজের হোটেলের কার্যক্রমের জন্য
মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে রাজধানীর ওয়ারী বনগ্রামে একটি পাঁচ কোটি টাকা মূলের বাড়ি বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। আগামীতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এর প্রতিষ্ঠাতাদের আন্তরিক সাধুবাদ জানান ঢাকা জেলা প্রশাসক।