মাঝারী আকারের গরুর চাহিদা সবছেয়ে বেশি
বাংলামেইল প্রতিবেদক : পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঢাকায় অস্থায়ী পশুরহাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। হাট গুলোতে ক্রেতারা পছন্দের পশু দরদাম করছে।পশুর দাম কিছুটা বেশি বলছেন ক্রেতারা। দু-একদিনের মধ্যে হাট জমে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন ব্যাপারীরা।
এদিকে পশুর হাটের নিরাপত্তা জোরদারে ইজারাদারের পাশাপাশি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। হাটে জাল টাকা চিহ্নিতকরণ মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের জন্য সার্বক্ষনিক ব্যাংকিং সেবা ও পশু ডাক্তার নিশ্চিত করা হয়েছে হাটগুলোতে।
পুরান ঢাকার হাজারীবাগ লেদার টেকনোলজি মাঠে অস্থায়ী হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট-বড় অসংখ্য পশু হাটে উঠেছে। বেপারী ও খামারিরা দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির গরু-ছাগল মহিষ নিয়ে নিজেদের পসরা সাজিয়েছে। বাজারে এক লাখ টাকার নিচে কোন গরু নেই বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতা।
বাজারে ছোট পশু দেড় থেকে আড়াই লাখ ও মাঝারি থেকে বড় আকারের পশু তিন লাখ টাকা থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। তাছাড়া হাটে বিভিন্ন প্রজাতির ছাগল উঠেছে। প্রতিটি ছাগল ১০হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকানো হচ্ছে। দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত
মহিষের দাম চাওয়া হচ্ছে।ঞ
হাটে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে আসা "লালবাহাদুর" নামে একটি গরু ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গরুটির দাম ১৪ লাখ টাকা হাঁকছেন ব্যাপারী। এখন পর্যন্ত একজন ক্রেতা ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন বলে জানিয়েছেন পশুটির মালিক বাবলু ব্যাপারী ।
তিনি জানান, গরুটিকে আমি নিজের সন্তানের মত লালন পালন করেছি । এখন কাঙ্ক্ষিত দাম পেলে আমার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে জানান তিনি।
কুষ্টিয়া কুমারখালী এলাকা থেকে গরু নিয়ে আসা তাইজুল নামে একজন ব্যাপারে প্রতিবেদককে বলেন, নিজের খামারের ১৪ টা গরু নিয়ে হাজারীবাগের লেদার টেকনোলজি হাটে এসেছি । গত দুইদিন থেকে একটি গরু বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি। তার গরুগুলো মাঝারি ও ছোট আকারেরর হলেও দাম হাকছেন প্রতিটি দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা। বর্তমানে পশুর লালন পালন খরছ ও গোখাদ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গরুর দাম কিছুটা বেশি বলেও স্বীকার করেন তিনি।
শাহজালাল নামে একজন ক্রেতা যুগান্তরকে বলেন, হাটে গরু পছন্দ হলেও দাম বেশি চাওয়ায় এখনো কেনা হয়নি। আরেকটু সময় নিয়ে পছন্দের পশু দর দাম করে কিনতে চান বলে জানান এ ক্রেতা।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত ইজারাকৃত লেদার টেকনোলজি মাঠ চাপিয়ে আশেপাশের মহল্লা অলিগলিতে এবং বেশিরভাগ প্রধান সড়কে হাট বসোনোয় মানুষ চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
হাজারীবাগের অস্থায়ী পশুরহাটের ইজারাদার মোঃ ওয়াহিদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটলেও এখনো মূল বেচাকেনা শুরু হয়নি। পশুর দাম গতবারের তুলনায় এবার একটু বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, আজ এবং আগামী কালের মধ্যে হাট জমে উঠবে। তবে সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা আনুযায়ী হাট বসিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন ও খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।
ডিএমপি লালবাগ বিভাগের পুলিশ কমিশনার জাফর হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পশুর হাটের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। মানুষ নির্বিঘ্নে এসে কেনাকাটা করে যেতে পারে, এজন্য সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে । হাটে কোন অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, ছিন্তাইকারী যাতে অপ তৎপরতা করতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখা হচ্ছে । তাছাড়া কেনাকাটার পর নিরাপদে টাকা টাকা লেনদেনে বিভিন্ন ব্যাংকের পাশাপাশি পুলিশের পক্ষ থেকে জাল টাকা চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বসানো হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে হাটের ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি ।