মেইল প্রতিবেদক :
গরমে অতিরিক্ত চাহিদা ঘিরে সুস্বাধু মাঠা, লাবাং,লাচ্ছি, পুডিং, ক্ষীর, পায়েস ও দইসহ মিষ্টান্ন জাতীয় ভেজাল খাবারে সয়লাভ হয়ে গেছে রাজধানীসহ দেশের বাজার। পুরান ঢাকার হাজারীবাগ,কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জের অলিগলির গুপছি ঘরগুলোতে কারখানা বানিয়ে রাজধানী সহ দেশব্যাপী এসব নকল ও ভেজাল পণ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে একটি চক্র।
সরজমিনে জানা গেছে, পুরান ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় পবিত্র রমজানের বাজারকে টার্গেট করে অন্তত শতাধিক মৌসুমি ভেজাল ও নকল মাঠা, লাবাং,লাচ্ছি, পুডিং, ক্ষীর, পায়েস ও দইয়ের কারখানা গড়ে উঠেছে। ওইসব পণ্যের মুনমুন ওকে নামকরা প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির লোগো ব্যবহার করে নকল পণ্য চকবাজারসহ বিভিন্ন পাইকারি বাজারের মাধ্যমে সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন কারখানার একটি হলো হাজারীবাগের ভাগলপুর লেন এলাকার ৪৮/১, ফজলুর রহমানের বাড়ির নিচতলায় দুই মাস পূর্বে একটি কারখানা চালু করে আব্দুস সাত্তার নামে এক ব্যক্তি। ওই কারখানায় সুস্বাধু মাঠা, লাবাং,লাচ্ছি, পুডিং, ক্ষীর, পায়েস ও দইসহ মিষ্টান্ন জাতীয় ভেজাল পণ্য উৎপাদন করে নামকরা কোম্পানী ইগলু, কোয়ালিটি সহ বিভিন্ন ব্যান্ডের কার্টুন ও মোড়ক লাগিয়ে বাজারজাত করছে। রবিউল নামে ওই কারখানায় কর্মচারী বলেন, আমরা খোলা বাজার থেকে নামীদামী কোম্পানির পণ্যের মোড়ক ও কাটুনগুলো উচ্চমূল্যে কিনে এনে আমাদের উৎপাদিত পন্য ওইসব কার্টুনে ভরে বাজারজাত করছি। এতে লাভের অংকটাও বেশ বলে জানান তিনি।
ওই কারখানাটির মালিক আব্দুস সাত্তার মুঠোফোনের বলেন দুগ্ধ জাতীয় কোন পণ্যের বিএসটিআই, ট্রেড লাইসেন্স অথবা কোন ধরনের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডের মোড়ক ও কাটুন নকল করার বিষয় তাকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি প্রতিবেদককে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এদিকে পুরান ঢাকার চকবাজারের পাইকারী মার্কেটের মাধ্যমে নিম্নমানের ও নকল পণ্য সারাদেশে বিপণ করা হচ্ছে। অলি গলির গুপছি কারখানাগুলোতে উৎপাদিত পণ্যগুলো এইসব দোকানে জড়ো করা হচ্ছে। পরে নির্ধারিত পাইকারদের মাধ্যমে রাজধানীসহ দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে ওইসব পণ্য। এসব পণ্য নিজের অজান্তেই ব্যবহার করে ভোক্তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
কয়েকজন ভুক্তভোগী বলেন, চটকদার মোড়ক দেখে লাবাং কিনে নিয়ে খাওয়ার পর পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। ইফতারের আগে অনেক সময় তাড়াহুড়ার কারণে সঠিক পণ্য বাছাই করা সম্ভব হয় না বলে জানান এসব ভুক্তভোগী।
বিষয়ে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ঢাকা মেট্রোপলিটনের খাদ্য অফিসার মেহরিন যারিন তাসনিম বলেন, যে কোন ধরনের খাদ্য পন্য মোড়কজাত করতে হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিএসটিআই সহ অন্যান্য সংস্থা থেকে অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু অন্য কোন ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠিত পণ্যের মোড়ক নকল করার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাবু/সাহা